জেনারেটরের
প্রধান কম্পনেন্টস এবং এদের বর্ননা (Main components of generator)
ইঞ্জিনঃ
ইঞ্জিন হচ্ছে জেনারেটরের মেকানিক্যাল শক্তির মুল উৎস যেটা
জেনারেটরকে চালিত করে। ইঞ্জিনের আকার বা সাইজ জেনারেটরের সর্বোচ্চ আউটপুট পাওয়ার এর
সরাসরি সমানুপাতিক। জেনারেটর ইঞ্জিনের নির্বাচন করার অনেকগুলি কারণ বিবেচনাযর দরকার
হয়। ইঞ্জিন ম্যানুফ্যাকচারার ইঞ্জিনের মেইন্টেন্যান্স শিডিউল, পরিচালনা এবং বিভিন্ন
প্রকার গাইডলাইন দিয়ে থাকে। জেনারেটর ইঞ্জিন সাধারনত ডিজেল, গ্যাসোলিন, প্রোপেন অথবা
ন্যাচারাল গ্যাস দিয়ে চালিত হয়। কিছু কিছু ইঞ্জিন ডুয়েল ফুয়েল, ডিজেল ও গ্যাস উভয় দিয়ে
চলতে পারে।
অল্টারনেটরঃ
অল্টারনেটর জেনারেটরের
একটা পার্ট যা মেকানিক্যাল ইনপুটের মাধ্যেমে শক্তি উৎপাদন করে। অল্টারনেটর অনেকগুলো
জটিল কম্পনেন্টস দিয়ে গঠিত। এটা শ্যাফট, রোটর, স্ট্যাটর এবং এছাড়া আরো কিছু গুরুত্তপুর্ন
উপাদান দিয়ে গঠিত। অল্টারনেটরের এই কম্পনেন্টগুলো একত্রে কাজ করে এবং ম্যাগনেটিক এবং
ইলেক্ট্রিক ফিল্ড তৈরি করে ইলেক্ট্রিক কারেন্ট তৈরী করে।
ফুয়েল সিস্টেমঃ
ফুয়েল সিস্টেম এ সাধারনত
একটি ফুয়েল ট্যাংক থাকে যেটা পাইপ দ্বারা ইঞ্জিনের সাথে সংযুক্ত থাকে। এখানে ডিজেল
ফুয়েল হিসেবে ব্যবহার হতে পারে যেটা ইঞ্জিন স্টার্ট এর জন্য ডাইরেক্ট ব্যবহার হয়ে থাকে।
ফুয়েল ট্যাংক এর আকার জেনারেটরের রানিং বা একটিভ সময়ের উপর নির্ভর করে তৈরি হয়ে থাকে।
কমার্সিয়াল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফুয়েল ট্যাংক স্থাপন করা হয়। ইঞ্জিন থেকে ফুয়েল
ফেরত আসার জন্য একটি রেটার্ন লাইন ও স্থাপন করা থাকে।
ফুয়েল ট্যাংকে
ভেন্ট পাইপ থাকে যেটা দিয়ে চাপযুক্ত এবং জমাকৃত বাতাস বের হয়ে যায় বিষেশকরে যখন ফুয়েল ট্যাংকে ফুলে প্রবেশ বা বের করা
হয়। ওভারফ্লো পাইপ দিয়ে অতিরিক্ত তেল বাইরে পরে যায় যেন জেনারেটরের বডিতে না লাগে।
ফুয়েল পাম্প
যেটা ফুয়েল এর মেইন স্টোরেজ ট্যাংক থেকে ডে ট্যাংক এ ট্রান্সফার করে। ফুয়েল ফিল্টার
ওয়াটার এবং অপদ্রব্য দূর করে ফুয়েলকে পরিস্কার করে রাখে এতে জেনারটর ক্ষয় এবং বিচ্যুতির
হাত থেকে রক্ষা পায়। ফুয়েল ইঞ্জেক্টর প্রয়োজনমত ফুয়েল ইঞ্জিনের কম্বাশন পাঠায় ইগনিশন
কার্জক্রম সম্পাদনের জন্য। Main components of generator
লুব্রিকেশন
সিস্টেমঃ যেহেতু জেনারেটরে
ঘুর্নায়মান যন্ত্রাংশ বিদ্যামান তাই এতে লুব্রিকেশন সিস্টেম থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
আরেকটি গুরুত্তপুর্ন বিষয় হচ্ছে জেনারেটর দীর্ঘসময় রানিং থাকে বিধায় লুব্রিকেশন সিস্টেম
জেনারেটরে ম্যানুফ্যাকচারার কর্তৃক দেওয়া হয়। লুব্রিকেশন সিস্টেম মুভিং যন্ত্রপাতি
বা ঘুর্নায়মান অংশগুলোগে ঘর্ষনের হাত থেকে রক্ষা করে এবং গরম হতে দেয় না। জেনারেটর
রানিং অবস্থায় প্রতি ৮ ঘন্টা অন্তর অন্তর লুব্রিকেশন লেভেল চেক দেওয়া উচিৎ। প্রতি ৫০০
ঘন্টা পর লুব্রিকেশন পরিবর্তন করা উচিৎ।
কন্ট্রোল প্যানেলঃ কন্ট্রোল প্যানেল হচ্ছে ব্যবহারকারীর ইন্টারফেস। এটা ব্যবহারকারীকে মনিটরের মাধ্যেমে জেনারেটর নিয়ন্ত্রন করতে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এডজাস্ট করতে সাহায্য করে। কি পরিমান কারেন্ট, ভোল্টেজ উৎপাদন হচ্ছে এবং ফ্রিকুয়েন্সি, ওয়েল প্রেসার, কুল্যান্ট টেম্পেরেচার, ইঞ্জিন রেশিও স্পিড, ওয়ার্কিং প্রিয়ড, ফেজ সিলেক্টর, ব্যাটেরি চার্জ এগুলো মনিটরের কন্ট্রোল প্যানেল এর মাধ্যেমে বোঝা যায়। এছাড়া জেনারেটর অটো স্টার্ট, জেনারেটর অটোমেটিক বন্ধ যখন কোন লোড বা পাওয়ারের প্রয়োজন নেই এগুলো কন্ট্রোল প্যানেল দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়।
ব্যাটারী
চার্জারঃ গাড়ীর মত জেনারেটর
স্টার্ট এর জন্য ব্যটারী দরকার। ব্যাটারীর অবশ্যই চার্জ থাকার দরকার যেন জেনারেটর রানিং
থাকা অবস্থায় যেন ব্যাটারী চার্জ হতে পারে।
ভোল্টেজ রেগুলেটরঃ জেনারেটরের অল্টারনেটর এসি কারেন্ট উৎপন্ন করে। এই উৎপাদিত এসি কারেন্ট ব্যাটারি চার্জিং এর জন্য যথেষ্ট নয় ব্যাটেরি স্টোরেজ সিস্টেম এবং মেশিন অপারেটিং এর জন্য তাই ডিসি কারেন্ট দরকার এই উৎপাদিত কারেন্টের পরিবর্তে। ভোল্টেজ রেগুলেটর জেনারেটরের আউটপুট ভোল্টেজকে নিয়ন্ত্রন করে এবং কারেন্টের ভোল্টেজকে নিয়ন্ত্রন করে এবং এসি থেকে ডিসি কারেন্টে পরিবর্তিত করে। Main components of generator
কুলিং এবং
এগজাস্ট সিস্টেমঃ
কুলিং সিস্টেমঃ
জেনারেটরের প্রতিনিয়ত চলমান থাকার ফলে এর যন্ত্রাংশগুলো উত্তপ্ত হয় তাই এই উৎপাদিত
তাপ কমানোর জন্য কুলিং সিস্টেম এর প্রয়োজন।
ফ্রেশ ওয়াটার
জেনারেটরের কুল্যান্ট হিসেবে ব্যবহার হয়। এবং
অনান্য সাধারন ব্যবহারের জন্য স্ট্যান্ডার্ড রেডিয়েটর এবং ফ্যান জেনারেটরের সাথে মাউন্ট
করা হয় যা প্রাইমারী কুলিং সিস্টেম হিসেবে কাজ করে। জেনারেটরের কুল্যান্ট লেভেল প্রতিদিন
চেক করা খুবই জরুরী। জেনারেটর খোলামেলা জায়গা যেখানে যথেষ্ট বাতাস চলাচল থাকে এবং কমপক্ষে
জেনারেটরের চতুর্দিকে ৩ ফিট ফাকা জায়গা থাকা দরকার।
এগজাস্ট সিস্টেমঃ জেনারেটর থেকে নির্গত গ্যাস খুবই বিষাক্ত যা সঠিকভাবে নির্গমনের প্রয়োজন। তাই এগজাস্ট গ্যাস নির্গমনের জন্য একটি নিস্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন করা বেশ জরুরী।
মেইন এসেম্বলি
বা ফ্রেমঃ প্রত্যেক
জেনারেটরের একটি প্রধান ফ্রেম বা স্কিড থাকে যেটার উপর জেনারেটরের সকল অংশগুলো অবস্থান
করে এবং শক্তভাবে আটকে থাকে। এই ফ্রেমটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যেন অতি সহজেই জেনারেটরকে
এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় এবং সহজেই এটা গ্রাউন্ডে স্থাপন করা যায়।
এই ফ্রেম আরো নিশ্চিত করে যে এটা সঠিকভাবে আর্থিং হয়েছে কিনা যার মাধ্যেম সঠিক অপারেশন
এবং সেফটি নিশ্চিত হয়।
টার্বোচার্জারঃ টার্বোচার্জার ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিনের কম্বাশন প্রক্রিয়া স্মুথ করার জন্য এবং ইঞ্জিনের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। প্রথমে ফ্রেশ এয়ার বায়ুমন্ডল হতে গ্রহন করে এবং এয়ার ফিল্টার এবং এয়ার কুলার হয়ে ঠান্ডা হয়ে বাতাস কম্বাশন চেম্বারে প্রবেশ করে। এরপর ইঞ্জিনের পাওয়ার স্ট্রোক সম্পুর্ন হওয়ার পর প্রজ্জলিত গ্যাস বাইরে চলে যায় টারবাইনের মাধ্যেমে। টারবাইন এবং কম্প্রেশর একই সাথে যুক্ত থাকে তাই যে স্পিডে প্রজ্জলিত গ্যাস বাইরে বেরিয়ে যায় ঠিক সেই স্পিডে বাইরের ফ্রেশ বাতাস ইঞ্জিনে প্রবেশ করে।
প্রশ্ন
এবং উত্তরঃ
প্রশ্নঃ১। জেনারেটর
মুলত কয়টি পার্ট থাকে?
উত্তরঃ ইঞ্জিন
পার্ট এবং অল্টারনেটর পার্ট।
প্রশ্নঃ২। জেনারেটরের
কত স্ট্রোকের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ ৪ স্ট্রোকের
ইঞ্জিন।
প্রশ্নঃ৩। কত
সিলিন্ডারের ইঞ্জিন বর্তমানে ব্যবহার করছেন আপনার জেনারেটরের জন্য?
উত্তরঃ ৪/৬/৮
এরকম (আপনার ব্যবহারের ধরনের উপর।
প্রশ্নঃ৪। কত
KVA জেনারেটর ব্যবহার করছেন?
উত্তরঃ 180
KVA (আপনার ব্যবহারের ধরনের উপর)। 1 kVA × 0.8 = 0.8 kW
প্রশ্নঃ৫। একটি
জেনারেটরে কত ধরনের ফিল্টার ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ সাধারনত
তিন ধরনের ফিল্টার থাকে। ক) ফুয়েল ফিল্টার খ) মবিল বা লুব্রিকেটিং ওয়েল ফিল্টার গ) এয়ার ফিল্টার ।
প্রশ্নঃ৬। জেনারটের
অপারেটিং এর পুর্বে কি কি চেক করতে হবে?
উত্তরঃ
ক)
জেনারটরটি প্রথমে পরিস্কার করতে হবে।
খ) ব্যাটারির পানির লেভেল ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে।
গ)
রেডিয়েটরের পানির লেভেল চেক দিতে হবে।
ঘ) লুব্রিকেটিং ওয়েল লেভেল চেক দিতে হবে।
প্রশ্নঃ৭। জেনারটেরের ফিল্টার কখন কখন পরিবর্তন করতে
হবে?
উত্তরঃ ফিল্টার
পরিবর্তন এর জন্য জেনারেটর ম্যনুফ্যাকচারাররা পেপারস দিয়ে থাকে। এছাড়া কত ঘন্টা পর
পর ফিল্টার পরিবর্তন করতে হবে সেটাও নির্দেশনা দিয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ৮। আপনার
জেনারটেরের ইঞ্জিনের টাইপ কি? Inline Type or V type?
উত্তরঃ আপনার ব্যবহারের ধরনের উপর।
প্রশ্নঃ৯। টার্বোচার্জার
এর R.P.M কত?
উত্তরঃ টার্বোচার্জার
এর R.P.M প্রায় ১ লাখ এর উপরে।
প্রশ্নঃ১০। টার্বোচার্জার
কেন পেট্রোল ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হয় না?
উত্তরঃ পেট্রোল ইঞ্জিনের ফুয়েল হিসেবে পেট্রোল ব্যবহার করা হয় এবং পেট্রোলের দহন ক্ষমতা ডিজেলের চেয়ে বেশি তাই পেট্রোল ইঞ্জিনে টার্বোচার্জার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না।
Post a Comment