ধাতু কি? (What is metal) I ধাতুর প্রকারভেদ (Types of Metal and their classification) I মেটালের ব্যবহার (Application of Metal)

Types of Metal and their classification
                                                                       Image link
ধাতু এবং এর উৎপাদ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি বর্তমানে শিল্প বিপ্লব ঘটিয়েছে। এটি মানব সভ্যতার অভাবনীয় পরিবর্ত ঘটিয়েছে। আমাদের ব্যবহারের ছোট বড় সবকিছুই প্রায় ছোট বড় মেটাল দিয়ে তৈরি। আমাদের চারিপাশে বিভিন্ন প্রকার মেটাল বিদ্যমান। 

অর্থাৎ ধাতু হচ্ছে একটি উপাদান যার নমনীয়তা, বিদ্যুৎ পরিবাহী ক্ষমতা, তাপয়ী এবংঅনান্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। 

ধাতু নিম্নলিখিতভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায় (Types of Metal and their classification) 

১. আয়রন উপাদান অনুযায়ী 

আয়রন কনটেন্ট অনুযায়ী মেটাল আবার দুই প্রকারঃ 

I) ফেরাস মেটালঃ যে সকল মেটাল বা ধাতুতে আয়রন থাকে তাকে ফেরাস মেটাল বলে। ফেরাস মেটালে চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্য থাকে। যেমন স্টীল, এ্যলয় স্টীল, কাস্ট আয়রন রট আয়রন।
 

স্টীলের প্রকারভেদ (Types of steel)  

A) স্টেইনলেস স্টীলঃ কার্বন এবং আয়রন এই দুইটি উপাদান দিয়ে স্টীল তৈরি হয়। স্টিলে ১০.৫% ক্রোমিয়াম, ১.২% এর কম কার্বন এবং অনান্য এ্যলয় এর উপাদান থাকে। 

B) টুল স্টীল ঃ কার্বন স্টীল হচ্ছে আয়রন-কার্বন এ্যলয় যার মধ্যে ২.০৬% কার্বন, ১.৬৫% ম্যাংগানিজ, ০.৫% এর বেশি সিলিকন এবং সালফার, ফসফরাস অপদ্রব্য হিসেবে থাকে। কার্বনের উপাদান শক্তি এবং নমনীয়তার পরিমান নির্ধারন করে। 

C) এ্যলয় স্টীলঃ অ্যালয় স্টিল হল এক ধরনের স্টীল যা মলিবডেনাম, ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল, ক্রোমিয়াম, ভ্যানাডিয়াম, সিলিকন এবং বোরনের মতো বিভিন্ন উপাদানের দিয়ে তৈরি। এই এ্যলয় উপাদানগুলো স্টিলের হার্ডনেস, ওয়্যার রেজিস্ট্যান্স এবং টাফনেস বৃদ্ধি করে। এই এ্যলয় উপাদানগুলো স্বাধারনত ১-৫০%  এর মধ্যে থাকে। 

D) কার্বন স্টীল ঃ কার্বন স্টীল হচ্ছে স্টীলের সাথে কার্বন উপাদান যুক্ত ০.০৫% থেকে ২.১% এর ওজন অনুযায়ী।  

কার্বন স্টীলের প্রকারভেদঃ (Types of carbon steel)

A) লো কার্বন স্টীলঃ লো কার্বন স্টীলকে মাইল্ট স্টীল ও বলা হয়। লো কার্বন স্টীলে একদম কম কার্বন উপাদান থাকে এবং পরিমান হিসেবে ০.০৫% থেকে ০.৩% থাকে। এটি সাধারনত দামে কম এবং ব্যবহারের  অনুযায়ী ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। এর ম্যাগনেটিক বেশিষ্ট্য সমৃদ্ধ কারন এতে উচ্চ আয়রন উপাদান আছে। 
B) মিডিয়াম কার্বন স্টীলঃ মিডিয়াম কার্বন স্টীলে ০.২৫% থেকে ০.৬% কার্বন থাকে। এবং ম্যংগানিজ ০.৬০% থেকে ১.৬৫% থাকে। এটি কার্যক্ষমতা, মুল্য এবং স্থায়ীত্বের ভারসম্য প্রদান করে। মিডিয়াম কার্বন স্টীল অটোমোবাইল এবং মেশিন পার্টস তৈরিতে ব্যবহার হয়। এটা অন্যন্য স্টীলের তুলনায় কিছুটা ভঙ্গুর এবং ওয়েল্ডিং এবং মেশিনিং কিছুটা কঠিন। এই ধরনের স্টীল শ্যাফট, এক্সেল, গিয়ার , ক্র্যাংকশ্যাফট এবং কাপলিং তৈরিতে ব্যবহার হয়।

C) হাই কার্বন স্টীলঃ হাই কার্বন স্টীলে ০.৬% বা তার বেশি কার্বন থাকে। নাম অনুযায়ী বিশ্লেষন করতে গেলে বোঝা যায় এতে উচ্চ পরিমানের কার্বন উপাদান থাকে। হাই কার্বন স্টীলে সাধারনত ০.৬০% কার্বন থাকে। এটাকে কার্বন টুল স্টিলও বলা হয় যাতে ০.৬১% থেকে ১.৫% কার্বন থাকে। হাই কার্বন স্টীল অনেক শক্তিশালী এবং কঠিন কিন্তু এটা অপেক্ষাকৃত কম নমনীয় মিডিয়াম কার্বন স্টীলের তুলনায়। হাই কার্বন স্টীল সাধারনত রোলিং মিলস এ , স্ক্র-ড্রাইভারস, হ্যামারস, র‍্যানচ, ব্যন্ড স এবং বিভিন্ন কাটিং টুলস তৈরিতে ব্যবহার হয়।  

কাস্ট আয়রনঃ কাষ্ট আয়রন হচ্ছে আয়রন-কার্বন এ্যলয় এর একটি দল যাতে ২-৪% কার্বন উপাদান থাকে। অন্যভাবে, কাষ্ট আয়রন হচ্ছে আয়রন এ্যলয় যাতে ২%-৪% কার্বন থাকে, এছাড়াও ১% থেকে ৩% সিলিকন এবং অল্প পরিমান অনান্য উপাদান থাকে। কাষ্ট আয়রন ইলেক্ট্রিক্যল ফিটিং, হ্যান্ড টুলস, পাইপ ফিটিংস, ফার্ম যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

এর প্রকারভেদঃ ১। গ্রে কাষ্ট আয়রন ২। হোয়াইট কাষ্ট আয়রন ৩। ম্যলিয়্যাবল কাষ্ট আয়রন ৪। ডাকটাইল কাষ্ট আয়রন ৫। মোটেল্ড কাষ্ট আয়রন ৬। চিল্ড কাষ্ট আয়রন ৭। চিল্ড কাষ্ট আয়রন ৮। এ্যলয় কাষ্ট আয়রন।

রট আয়রনঃ পেটা লোহা বা রট যার রয়েছে উচ্চ টেনসাইল স্ট্রেংথ এবং এটি কাষ্ট আয়রনের চেয়ে নমনীয়। এতে ০.১০% কার্বন থাকে এতে ০.২৫% অপদ্রব্য যেম সালফার, ফসফরাস, সিলিকন, ম্যাংগানিজ এবং ২% স্লাগ এর কম ওজন অনুযায়ী থাকে। এটা এক প্রকারের লোহা যা শক্ত নমনীয় এবং ক্ষয় প্রতিরোধী। এটি মেটাল গেট, লোহার রেলিং, বাগানের ফার্নিচার তৈরিতে সাধারনত ব্যবহ্রত হয়।
II) নন ফেরাস মেটালঃ যে সকল মেটাল বা ধাতুতে আয়রন থাকে না তাকে নন ফেরাস মেটাল বলে।ফেরাস মেটালে চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্য থাকে না। যেমন অ্যালুমিনিয়াম, লিড, ব্রাস, কপার,টিন, ব্রাশ, টাইটেনিয়াম, কোবাল্ট, নিকেল, টাংষ্টেন এবং জিঙ্ক। 

এলুমিনিয়ামঃ এ্যলুমিনিয়াম হচ্ছে রুপালী সাদা এবং হালকা ওজনের ধাতু। এটি নরম ধাতু এবং নমনীয়। এ্যালুমিনিয়াম সাধারনত ক্যান, ফয়েল টেপ, কিচেন সামগ্রী, জানালাম ফ্রেম এবং অফিসিয়াল ডেকোরেশন একসেসোরিস বানাতে ব্যবহার হয়।
কপারঃ কপার হচ্ছে একটি রাসয়নিক উপাদান যার প্রতীক CU এবং কপারের পারমানবিক সংখ্য ২৯। এটি নরম এবং নমনীয় ধাতু এবং এর উচ্চ তাপ এবং বিদ্যৎ পরিবাহী ক্ষমতা রয়েছে। খাটি কপার গোলাপী কমলা রঙ এর হয়ে থাকে। কপার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় বৈদ্যুতিক তার এবং মোটর এর ওয়িন্ডিং এর ব্যবহার হয়।
জিঙ্কঃ দস্তা হল একটি রাসায়নিক উপাদান যার প্রতীক Zn এবং পারমাণবিক সংখ্যা 30।  এটি  সাধারন তাপমাত্রায় ভঙ্গুর ধাতু এবং অক্সিডেশন অপসারণের সময় এটি রূপালী-ধূসর বর্ণ ধারণ করে। 
এছাড়াও 

২.পারমাণবিক গঠন অনুযায়ী 
৩.চৌম্বক এবং অ-চৌম্বকীয় ধাতু অনুযায়ী 

ধাতুর বৈশিষ্ট্য 

  • উচ্চ গলনাঙ্ক 
  • ভাল বিদ্যুৎ পরিবাহী 
  • ভাল তাপ পরিবাহী 
  • উচ্চ ঘনত্ব 
  • নমনীয়তা 
1. Fuse কি? 2. Relay কি? 3. Pressure sensor কি? 4.রেকটিফায়ার (Rectifier) কি

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Multiplex ads