মেইনটেন্যান্স কি
মেইনটেন্যান্স হল, দীর্ঘকাল ব্যবহারের ফলে মেশিন, ইকুইপমেন্ট বা সিস্টেমের ক্ষয়ের কারণে ফাংশন, ব্যবহার কাল ও কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়াকে প্রতিরোধ করতে চালানো পরীক্ষণ ও মেরামত কার্যক্রম। মেশিনে বিভিন্ন কারণে ক্ষয় হয়, যেমনঃ ঘর্ষণ, ক্যাভিটেশন, বাহ্যিক আঘাত, ইন্টারনাল ইমপ্যাক্ট, মেকানিক্যাল পার্ট (যেমনঃ নাট, বোলট, চেইন, বেল্ট) ঢিলা হয়ে যাওয়া, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্টারফিয়ারেন্স, দূষণ ইত্যাদি। বিভিন্ন উদ্দেশ্যে মেইনটেন্যান্স করা হয়।১. মেশিন বা ইকুইপমেন্ট ব্যাবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ
২. পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ
৩. মেশিন বা ইকুইপমেন্টের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিতকরণ
৪. মেশিন বা ইকুইপমেন্টের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি
মেইনটেন্যান্স বিভিন্ন ধরনের হয়
(১) কারেক্টিভ মেইনটেন্যান্স
যখন কোন মেশিন বা ইকুইপমেন্ট নষ্ট হয়ে যায় বা কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন যেই মেইনটেন্যান্স করা হয় তাকে কারেক্টিভ মেইনটেন্যান্স বলে। সাধারণত যে সব যন্ত্রাংশ মাইন্টেন্যান্সে থাকলে প্রডাকশন হ্রাস পায় না বা প্ল্যান্ট এর অপারেশনে কোন বিঘ্ন ঘটে না বা রিপ্লেস করা ব্যয়বহুল নয় (রেগুলার মেইনটেন্যান্স ব্যয় রিপ্লেসের খরচের থেকে বেশি হয়, যেমনঃ বাল্ব), তাদের ক্ষেত্রে এই মাইন্টেন্যান্স ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের মাইন্টেন্যান্সে রিপেয়ার বা রিপ্লেস যে কোনটিই করা যেতে পারে।
উপকারিতাঃ
১. কম জনবল প্রয়োজন২. স্বল্পমেয়াদি মেইনটেন্যান্স খরচ কমে
অপকারিতাঃ
১. শ্রমিক ও মেশিনের জন্য অসুরক্ষিত২. মেশিনের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারযোগ্যতা হ্রাস পায়
৩. যে কোন সময়ে ফেইলিউরের সম্ভাবনা থাকে
(২) পিরিওডিক মেইনটেন্যান্স/টাইম বেস্ড মেইনটেন্যান্স (টি বি এম)
প্রতিটি মেশিন, ডিভাইস বা ইকুইপমেনটের ১টি আনুমানিক ব্যবহার কাল থাকে। এটি এক্সপেরিমেন্ট, প্রোডাক্টের ইউসার ম্যানুয়াল, পূর্বে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়। এই ব্যবহার কালের ডাটার উপর ভিত্তি করে যেই মেইনটেন্যান্স করা হয় তাকে পিরিওডিক মেইনটেন্যান্স বলে। যেই সব যন্ত্রাংশ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে কাজ করে তাদের ক্ষেত্রে আনুমানিক ব্যবহার কাল ও প্রকৃত ব্যবহার কাল বেশ কাছাকাছি হয়। লুব্রিকেন্ট পরিবর্তন করা, ফিলার এলিমেন্ট পরিবর্তন করা, তাপমাত্রা ও প্রেশার গেজ চেক করা এগুলো পিরিওডিক মেইনটেন্যান্সের অন্তর্ভুক্ত।
উপকারিতাঃ
১. ব্যয় তুলনামূলক কম২. মেশিন ও ইকুইপমেন্ট এর স্থায়িত্বকাল বৃদ্ধি পায়
৩. কাজ বা প্রডাকশন চলাকালীন ইকুইপমেন্ট ফেইল কম হয়, ফলে অপরিকল্পিত ডাউনটাইম কমে যায়
৪. ব্যয়বহুল মাইন্টেন্যান্সের সংখ্যা কমে যায়
অপকারিতাঃ
১. অধিক জনবল প্রয়োজন২. অপ্রয়োজনীয় মেইনটেন্যান্স বেড়ে যায় (পিরিওডিক মেইনটেন্যান্সের ক্ষেত্রে প্রায় ৩০% সময় ত্রুটি পাওয়া যায় না)
(৩) প্রেডিক্টিভ মেইনটেন্যান্স
বর্তমানে, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে আমরা যে কোন মেশিনের বিভিন্ন প্যারামিটার (তাপমাত্রা, চাপ, ভাইব্রেশন, পাওয়ার কনসাম্পশন ইত্যাদি) গেজ এবং সেন্সরের সাহায্যে পরিমাপ করতে পারি। কোন ১টি প্যারামিটার এর মান নির্দিষ্ট সীমার থেকে বেশি ফ্রাকচুয়েট করলে অনুমান করা হয় মেশিনে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী মেইনটেন্যান্স করা হয়। এই ধরনের মেইনটেন্যান্সকে প্রেডিক্টিভ মেইনটেন্যান্স বলে। পিরিওডিক মেইন্টেন্যান্সের সাথে প্রেডিক্টিভ মেইন্টেন্যান্সের পার্থক্য হল, পিরিওডিক মেইন্টেন্যান্সের ক্ষেত্রে রুটিন মেনে, নির্দিষ্ট সময় পর পর মেইনটেন্যান্স করা হয়, কিন্তু প্রেডিক্টিভ মেইন্টেন্যান্সের ক্ষেত্রে কোন মেজারেবল প্যারামিটার অ্যাবনরমাল ভ্যালিউ প্রদর্শন করলেই কেবলমাত্র মেইনটেন্যান্স করা হয়। মেইন্টেন্যান্সের এই পদ্ধতি টেকনিক্যাল রিসোর্স এবং জ্ঞানের উপর অধিকতর নির্ভরশীল।
উপকারিতাঃ
১. তুলনামূলক কম জনবল প্রয়োজন২. মেইন্টেন্যান্স বাধা ধরা সময়ে করা লাগে না
৩. পিরিওডিক মেইন্টেন্যান্সের মত নিয়মিত চেক করা লাগে না বলে, ইকুইপমেন্ট অধিক সময় পিক এফিশিয়েন্সিতে চলার সুযোগ পায়
অপকারিতাঃ
১. দক্ষ জনবল প্রয়োজন২. প্রেডিকশনে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্যারামিটার পরিমাপের জন্য যন্ত্রপাতি প্রয়োজন
Join our Facebook group
Post a Comment