ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি? এর ব্যবহার ক্ষ্রেত্র গুলো কি কি?



প্রশ্নঃ ১। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি? এর ব্যবহার ক্ষ্রেত্র গুলো কি কি?

উত্তরঃ ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি ফিল্ড যেখানে ইলেক্ট্রিসিটি, ইলেক্ট্রনিক্স, এবং ইলেক্ট্রম্যাগনেটিজমের ব্যবহার নিয়ে কাজ করে। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সাধারনত কাজ করে ভোল্টেজ, অল্টারনেটিং কারেন্ট বিষেশ করে ১১০ ভোল্ট বা ২২০ ভোল্ট এর উপরে।

অথবাঃ ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটা ফিল্ড যেখানে ইলেক্ট্রিসিটি, ইলেক্ট্রনিক্স এবং ইলেক্ট্রোমেকানিজম এর প্রয়োগ এবং ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়।

ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রয়োগক্ষেত্র এর নিম্নরুপঃ

· ইলেক্ট্রিক্যল পাওয়ার সিস্টেম

· ইলেক্ট্রিক্যল কন্ট্রোল সিস্টেম

· ট্রান্সফর্মার, ডায়োড, রেকটিফায়ার।

· এসি এবং ডিসি মোটর

· এসি এবং ডিসি জেনারেটর

· কমুনিকেশন সিস্টেম

· ডিজিটাল এবং এনালগ সিস্টেম।

প্রশ্নঃ ২। CT ও PT কি? এগুলো কোথায় ব্যবহার করা হয়?

উত্তরঃ

CT হচ্ছে কারেন্ট ট্রান্সফরমার। কারেন্ট ট্রান্সফর্মারে কম রেঞ্জের মিটার দিয়ে বেশি পরিমান কারেন্ট মাপার জন্য ব্যবহার করা হয়।

PT হচ্ছে পটেনশিয়াল ট্রান্সফর্মার। এটির মাধ্যেমে কম রেঞ্জের মিটারের মাধ্যেমে সার্কিটের বেশি পরিমান ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এটিকে Instrument transformer ও বলা হয়।

প্রশ্নঃ ৩। ট্রান্সফরমেশন রেশিও কাকে বলে?

উত্তরঃ ট্রান্সফর্মারের প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী কয়েলের প্যাচ সংখ্যা, ভোল্টেজ ও কারেন্টের অনুপাতকেই ট্রান্সফরমেশন রেশিও বলা হয়। Equation =

স্টিপ আপ ট্রান্সফর্মেশন রেশিও = ৩:২

প্রশ্নঃ ৪। ভোল্টেজ রেশিও কাকে বলে?

উত্তরঃ ট্রান্সফর্মারের Primary এবং Secondary উয়ান্ডিং এর টার্মিনাল ভোল্টেজের অনুপাতকে ভোল্টেজ রেশিও বলে। একে K দিয়ে বুঝানো হয়। Equation =

প্রশ্নঃ ৫। ট্রান্স রেশিও কাকে বলে?

উত্তরঃ ট্রান্সফর্মারের প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী উয়ান্ডিং এর টার্ন্স বা পাক সংখ্যার অনুপাতকেই ট্রান্স রেশিও বলে। টার্ন্স রেশিওকে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। লোড ছাড়া ভোল্টেজ এবং পাক সংখ্যার অনুপাত সমান। Equation =



প্রশ্নঃ ৬। ট্রান্সফরমারের রেটিং kW এ না লিখে kVA লেখা হয়ে থাকে কেন?

উত্তরঃ সাধারনত ট্রান্সফর্মার রেটিং মূলত দুটি কারনে করা হয় একটি হল পাওয়ার ফ্যাক্টর এবং অন্যটি হল ট্রান্সফর্মারের মধ্যে ঘটিত লসের কারনে।

ট্রান্সফরমারের টোটাল লস = কোর লস + কপার লস। কোর লসটা নির্ভর করে ভোল্টেজের উপরে এবং কপার লস নির্ভর করে কারেন্টের উপর। কিন্তু কথা হল ট্রান্সফরমারের টোটাল লস কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যবর্তী ফেজ কোণের উপর নির্ভর করেনা। কিলওয়াটের সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর বা কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যবর্তী ফেজ এঙ্গেল জড়িত কিন্ত kVA এর সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর থাকেনা। মূলত এইকারনেই ট্রান্সফরমারের রেটিং kW এ না লিখে kVA তে লেখা হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ ৭। ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা বেশি হয়ে থাকে কেন?

উত্তরঃ ট্রান্সফর্মার এমন একটি ডিভাইস যেটি স্থির থাকে। আর ট্রান্সফর্মারে কোন মুভিং বা ঘুর্নায়মান অংশ নেই আর এ কারনেই এতে ঘর্ষনজনিত কোন ক্ষয় নেই। তুলনামুলক অনান্য ঘুর্নায়মান যন্ত্রের তুলনায় ট্রান্সফর্মারের লস খুবই কম। তাই মুলত ট্রান্সফর্মারের কর্মদক্ষতা বেশি হয়। শতকরা হিসেবে ট্রান্সফর্মারের কর্মদক্ষতা ৯৫% থেকে ৯৮% হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ ৮। ট্রান্সফরমার লস কি এবং এদের প্রকারভেদ?

প্রশ্নঃ ১০। ওহমস ল এর সীমাব্ধতা কি?

প্রশ্নঃ ৯। ট্রান্সমিশন লাইনে যে বিভিন্ন প্রকার ক্যাবল ব্যবহার হয় তা কি কি?

উত্তরঃ

· লো টেনশন অথবা LT ক্যাবল ব্যবহার হয় ১০০০ ভোল্ট এর নিচে ট্রান্সমিশনে করার জন্য

· হাই টেনশন অথবা HT ক্যাবল ব্যবহার হয় ১১KV ভোল্ট এর উপরে ট্রান্সমিশনে করার জন্য

· সুপার টেনশন অথবা HT ক্যাবল ব্যবহার হয় ৩৩KV ভোল্ট এর উপরে ট্রান্সমিশনে করার জন্য

· এক্সট্রা হাই টেনশন ক্যাবল ব্যবহার হয় ৬৬KV ভোল্ট এর উপরে ট্রান্সমিশনে করার জন্য

· এক্সট্রা সুপার টেনশন ক্যাবল ব্যবহার হয় ১৩২KV ভোল্ট এর উপরে ট্রান্সমিশনে করার জন্য

প্রশ্নঃ ১০। ইন্ডাকশন মটরের স্লিপ কি?

উত্তরঃ ইন্ডাকশন মোটরের Synchronous speed (Ns) এবং Rotor speed (N) এর মধ্যে শতকরা হারকে ইন্ডাকশন মোটরের স্লিপ বলে। ইন্ডাকশন মোটরের রোটর স্পিড সর্বদাই সিঙ্ক্রোনাস স্পিডের চেয়ে কম হয়।

প্রশ্নঃ ১১। ইন্ডাকশন মটরের বিভিন্ন প্রকার স্টার্টিং পদ্ধতিগুলো কি কি?

উত্তরঃ

· ডাইরেক্ট অনলাইন স্টার্টার (DOL = Direct online starter)

· স্টার ডেল্টা স্টার্টার (Star Delta starter)

· রেজিস্ট্যান্স স্টার্টার (Resistance starter)

· রেজিস্ট্যান্স স্টার্টার (Series reactor starter)

· অটো ট্রান্সফর্মার স্টার্টার (Auto transformer starter)

প্রশ্নঃ ১২। কোন প্রকারের ট্রান্সফর্মার হাই ভোল্টেজের জন্য ব্যবহার হয়?

উত্তরঃ কোর টাইপ ট্রান্সফর্মার হাই ভোল্টেজ এপ্লিক্যাশনের (যেমনঃ ডিস্ট্রিবিশন ট্রান্সফর্মার, পাওয়ার ট্রান্সফর্মার, পাওয়ার ট্রান্সফর্মার এবং অবশ্যই অটোট্রান্সফর্মার ও এর মধ্যে অন্যতম) জন্য খুবই জনপ্রিয়। কারন হল হাই ভোল্টেজ হাই ফ্লাক্সের অনুরুপ। তাই আয়রন লস কমানোর জন্য মোটা কোর ব্যবহার করতে হবে। উপোরক্ত বিষয়গুলো থেকে বলা যায় কোর টাইপ হচ্ছে হাই ভোল্টেজের জন্য উত্তম।

প্রশ্নঃ ১৩। আইডিয়াল ট্রান্সফর্মার কি?

উত্তরঃ যে ট্রান্সফর্মারের কোন পাওয়ার লস নাই তাকে আদর্শ বা আইডিয়াল ট্রান্সফর্মার বলা হয়। যদি ইনপুট ১০০ ভাগ প্রদান করা হয় তবে আউটপুটেও ঠিক একই পরিমান পাওয়া যাবে। বাস্তবে সবকিছুরই পাওয়ার লস থাকে কিন্তু এটা খুবই কম পরিমানের হয়।

প্রশ্নঃ ১৪। লিকেজ ফ্লাক্স কি?

উত্তরঃ দুইটি কয়েলে অর্থাৎ প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী কয়েলে যে ধরনের ফ্লাক্স উৎপন্ন হয় তাকে লিকেজ ফ্লাক্স বলা হয়।

প্রশ্নঃ ১৫। ট্রান্সফর্মার ব্যংকিং কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?

উত্তরঃ ট্রান্সফর্মার ব্যংকিং এমন একটি পদ্ধতি যে পদ্ধতিতে একটি ত্রি-ফেজ ট্রান্সফর্মার ব্যবহার না করে তিনটি সিংগেল ফেজ ট্রান্সফর্মারের মাধ্যেমে ত্রি-ফেজ সাপ্লাই দেওয়া হয়। সাধারনত এই পদ্ধতিকেই ট্রান্সফর্মার ব্যংকিং বলা হয়।

ট্রান্সফর্মার ব্যংকিং ৬ প্রকার

· স্টার স্টার

· ডেল্টা ডেল্টা

· ডেল্ট স্টার

· স্টার ডেল্টা

· ওপেন ডেল্টা / (V-V)

· T-T কানেকশন।

প্রশ্নঃ ১৬। পাওয়ার ফ্যক্টর কি?

উত্তরঃ পাওয়ার ফ্যক্টর বলতে আমরা যেটা বুঝি সেটা হচ্ছে আমরা শতকরা কত ভাগ বিদ্যুতিক পাওয়ার প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতে পারি আর এই শতকরা হারকেই পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে।





এই পাওয়ার ফ্যক্টর এর ইকুয়েশন শুধু এসি কারেন্ট এর জন্য প্রযোজ্য।

১৭। পাওয়ার ফ্যাক্টর কত প্রকার কি? কি?

উত্তরঃ a) ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর (Lagging) b) লিডিং পাওয়ার ফ্যক্টর (Leading) c) ইউনিটি পাওয়ার ফ্যক্টর (Unity)।

১৮। ল্যাগিং, লিডীং এবং ইউনিটি পাওয়ার ফ্যক্টর কি?

উত্তরঃ

ল্যাগিংঃ যে সার্কিটে কারেন্ট ভোল্টেজের তুলনায় আগে থাকে। যে সার্কিটে ইন্ডাকটিভ লোড ক্যাপাসিটিভ লোডের তুলনায় বেশি থাকে সেই সার্কিটে পাওয়ার ফ্যক্টর ল্যাগিং হয় অর্থাৎ পাওয়ার ফ্যক্টরের মান কম থাকে আর এটাকেই পাওয়ার ফ্যক্টর ল্যাগিং বলি।

লিডিংঃ যে পাওয়ার ফ্যক্টরে কারেন্ট ভোল্টেজের তুলনায় পিছনে থাকে অর্থাৎ যে সার্কিটে ইন্ডাক্টিভ লোডের তুলনায় ক্যাপাসিটিভ লোড অনেক বেশি থাকে সেই সার্কিটে পাওয়ার ফ্যক্টর লিডীং হয় অর্থাৎ পাওয়ার ফ্যক্টরের মান বেড়ে যায় সেখানেই পাওয়ার ফ্যক্টর লিডিং হয়।

ইউনিটিঃ যে সার্কিটে কারেন্ট এবং ভোল্টেজ একই সংগে চলে বা একই সংগে থাকে অর্থাৎ যে সার্কিটে ইন্ডাক্টিভ লোড এবং ক্যপাসিটিভ লোড সমান অবস্থায় থাকে সেই সার্কিটে পাওয়ার ফ্যক্টর ইউনিটি হয়। কিন্তু বর্তমান পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে পাওয়ার ফ্যক্টর ইউনিটি হয় না।

বাসাবাড়ীর পাওয়ার ফ্যক্টরের মান বাসাবাড়ীর ক্ষেত্রে = ০.৯০ থেকে ০.৯৫

ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে পাওয়ার ফ্যক্টর এর মান = ০.৮ থেকে ০.৮৫

প্রশ্নঃ ১৯। পাওয়ার ফ্যক্টর ০.৭ বলতে কি বুঝায়?

উত্তরঃ পাওয়ার ফ্যক্টর ০.৭ বলতে বুঝায় যদি একটি লাইনের সাপ্লাই পাওয়ার ১০০ KVA হয় তবে সেখানে ৭০ Kw একটিভ পাওয়ার পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এখানে ৭০ ভাগ পাওয়ার আমরা ব্যবহার করতে পারব আর বাকী পাওয়ার ব্যবহার করতে পারব না।

প্রশ্নঃ ২০। বৈদ্যুতিক লোড কত প্রকার ও কি কি?

উত্তরঃ a) Resistive load b) Inductive load c) capacitive load

যে লোডগুলোত শুধুমাত্র পিওর রেজিস্ট্যান্স দ্বারা গঠিত সেগুলোকে রেজিস্টিভ লোড বলা হয়। যেমনঃ ফিলামেন্টযুক্ত লাইট, হিটার এগুলা।

যে লোডগুলোতে কয়েল থাকে সেগুলো সেই লোড হচ্ছে ইন্ডাকটিভ লোড। যেমন মোটর, ফ্যান

যে লোড গুলো ক্যাপাসিটর দ্বারা গঠিত সেগুলো ক্যপাসিটিভ লোড বলা হয়।

প্রশ্নঃ ২১। পাওয়ার ফ্যক্টর বেড়ে বা কমে গেলে কি হয়?

একটি মোটরের ক্ষেত্রেঃ  

উদাহরনঃ-১

উদাহরনঃ-২

HP = 10

HP = 10

Phase = 3

Phase = 3

Volt = 440

Volt = 440

Pf = 0.9

Pf = 0.7

যদি মোটরটিকে ০.৯ পাওয়ার ফ্যক্টর দিয়ে রান করি তাহলে মোটরটি কারেন্ট নিবে





যদি মোটরটিকে ০.৭ পাওয়ার ফ্যক্টর দিয়ে রান করি তাহলে মোটরটি কারেন্ট নিবে  






২২। সাব স্টেশন কি?

উত্তরঃ সাব স্টেশন হচ্ছে পাওয়ার সিস্টেমের একটি অংশ যেখানে ভোল্টেজ হাই থেকে লো এবং লো থেকে হাই তে রুপান্তরিত হয় এবং যেখান থেকে বিদ্যুৎ বিতরন, সুইচিং এবং বিভক্তিকরন এর কাজ করা হয়।    


0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Multiplex ads