রেজিস্টর কি? রেজিস্টর কত প্রকার এবং কি কি I What is resistor? Different Types of Resistors

https://www.airandhydraulic.com/2022/05/Different-types-of-resistors.html

রেজিস্টর(Resistors) হচ্ছে একটি দুইটি টারমিনাল বিশিষ্ট প্যাসিভ কম্পনেন্ট যা ইলেক্ট্রিক্যল সার্কিটের ইলেক্ট্রিক কারেন্ট ফ্লোকে কমাতে বা নিয়ন্ত্রন করতে ব্যবহার করা হয়। রেজিস্টর ব্যবহারের মুল উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে সার্কিটের কোন একটি অংশে কারেন্ট ফ্লো এবং ভোল্টেজকে কমানো। রেজিস্টর ওহম (Ω) এ পরিমাপ করা হয়। ওহমের সুত্রঃ R=V/I Different Types of Resistors

রেজিস্টর সাধারনত দুই ধরনেরঃ ১। লিনিয়ার রেজিস্টরস ২। নন-লিনিয়ার রেজিস্টরস

লিনিয়ার রেজিস্টরস (Linear resistors): যে সকল রেজিস্টরের ভ্যালু এপ্লাইড ভোল্টেজ এবং টেম্পেরেচারের ভিত্তিতে পরিবর্তন হয় তাকে লিনিয়ার রেজিস্টর বলা হয়। অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যে রেজিস্টরের কারেন্টের  ভ্যালু সরাসরি প্রয়োগকৃত ভোল্টেজের সমানুপাতিক তাকেই লিনিইয়ার রেজিস্টর বলা হয়। রেজিস্টর কি

লিনিয়ার রেজিস্টর দুই ধরনেরঃ

a) ফিক্সড রেজিস্টর(Fixed resistors): যে রেজিস্টরের ভ্যলু পরিবর্তনশীল নয় সেটাই হচ্ছে ফিক্সড রেজিস্টর। বিভিন্ন প্রকার ফিক্সড রেজিস্টরের নিম্ন্রুপঃ রেজিস্টর কত প্রকার এবং কি কি

I) কার্বন কম্পোজিশন রেজিস্টর(Carbon composition resistors): কার্বন কম্পোজিশন রেজিস্টর হচ্ছে ফিক্সড ভ্যালু রেজিস্টর। কার্বন কম্পোজিশন রেজিস্টর তৈরি করা হয় সলিড সিলিন্ড্রিক্যাল রেজিস্টিভ ইলিমেন্ট দিয়ে যার দুই প্রান্তে দুইটি ক্যপ ইন্ড করা দুইটি তার প্রবেশ করানো থাকে। রেজিস্টিভ ইলিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয় কার্বনের গুড়া এবং ইন্সুলেটিং হিসেবে ব্যবহার করা হয় সিরামিক। এই রেজিস্টর উচ্চ শক্তির পালস সহ্য করতে সক্ষম অনান্য রেজিস্টরের তুলনায়।  

II) ওয়্যার ওউন্ড রেজিস্টর(Wire wound resistors): ওয়্যার ওউন্ড রেজিস্টর হচ্ছে ইলেক্ট্রিক্যল প্যাসিভ কম্পনেন্ট যা ইলেক্ট্রিক্যাল কারেন্টকে লিমিট বা সীমাবদ্ধ করে। এই রেজিস্টর এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যেটাতে কন্ডাকটিভ ওয়্যার এর চারিদিকে নন-কন্ডাকটিভ ওয়্যার প্যাচানো হয়। এই ওয়্যারের রয়েছে উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এটি নাইক্রোম, ম্যাংগানিন এই জাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরি। এই রেজিস্টরের রয়েছে কম রেজিস্ট্যান্স ভ্যালু সম্পন্ন তাছাড়া এটি সুক্ষ এবং উচ্চ পাওয়ার রেটিং উৎপাদন করতে পারে। ওয়্যার ওউন্ড রেজিস্টর কার্বন কম্পোজিশন রেজিস্টরের তুলনায় কম নয়েজ উৎপন্ন করে। রেজিস্টার কত প্রকার এবং কি কি

III) থিন ফিল্ম রেজিস্টর(Thin film resistors): একটি সিরামিক বেজের উপরে পাতলা রেজিস্টিভ লেয়ার দিয়ে ফিল্ম রেজিস্টর গঠিত। থিন ফিল্ম রেজিস্টরে রেজিস্টিভ লেয়ার থিকনেস ০.১ মাইক্রোন। সকল থিন ফিল্ম রেজিস্টর তৈরি করা হয় উচ্চ গ্রিড সিরামিক রড এবং রেজিস্টিভ ম্যাটেরির‍্যাল দিয়ে।  

IV) থিক ফিল্ম রেজিস্টর(Thick film resistors):আর থিক ফিল্ম রেজিস্টরে রেজিস্টিভ লেয়ার থিকনেস সাধারনত ১০০ মাইক্রোন এর উপর হয়ে থাকে। থিক ফিল্ম রেজিস্টরের প্রডাকশন পদ্ধতি থিন ফিল্ম রেজিস্টরের প্রডাকশনের মত একদম একই কিন্তু পার্থক্য একটাই যেটা হচ্ছে থিন ফিল্মের পরিবর্তে থিক ফিল্ম অথবা রেজিস্টিভ ম্যটেরিয়ালের লেয়ার থাকে আর এ কারনেই একে থিক ফিল্ম রেজিস্টর বলে।Different Types of Resistors   

 b) ভেরিয়েবল রেজিস্টর(Variable resistors):যে রেজিস্টরের ইলেক্ট্রিক্যাল রেজিস্ট্যান্স ভ্যালু এডজাস্ট করা যায় সেই ধরনের রেজিস্টরকে ভেরিয়েবল রেজিস্টর বলা হয়। ইলেক্ট্রিক্যাল সার্কিটে এটা ব্যবহার করা হয় সার্কিটের রেজিস্ট্যান্স এডজাস্ট করতে অর্থাৎ একটি সার্কিটের ভোল্টেজ এবং কারেন্টকে কন্ট্রোল করতে ভেরিয়েবল রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়। এই রেজিস্টরের মূলত দুইটিভাগে বিভক্ত করা হয় তার মধ্যে রেজিস্ট্যান্স ট্র্যাক এবং উইপার কন্টাক্ট।

একটি স্লাইডিং উইপার কন্টাক্ট রেজিস্ট্যান্স ট্র্যাককে কেন্দ্র করে অবস্থিত থাকে এবং এতেই রেজিস্ট্যান্স ভিন্ন হয়ে থাকে। সক্রিয় রেজিস্ট্যান্স ভ্যালু নির্ভর করে স্লাইডার কন্টাক্ট এর বর্তমান অবস্থান রেজিস্ট্যান্স ট্র্যাকের উপর ভিত্তি। 

ভেরিয়েবল রেজিস্টরের প্রকারভেদঃ ১। পটেনশিওয়মিটারস ২। রিওস্ট্যাটস ৩। ডিজিটাল রেজিস্টর

পটেনশিওমিটার(Potentiometer resistors):এটি তিন টার্মিনাল বিষিষ্ট একটি ডিভাইস যা সার্কিটের ভোল্টেজ এর লেভেল কন্ট্রোলিং এর জন্য ব্যবহার হয়। এখানে উল্লেখ্য যে দুইটি এক্সটার্নাল টার্মিনালের মধ্যে রেজিস্ট্যান্স কন্সট্যান্ট যেখানে তৃতীয় টার্মিনালটি মুভিং কন্টাক্ট (উইপার) এর সাথে যুক্ত যেটাকে ভেরিয়েবল ধরা হয়।  কন্ট্রোল শ্যাফট এর উপার ঘুরিয়ে রেজিস্ট্যান্স ভ্যালু পরিবর্তন করা যায়।  

রিওস্ট্যাট(Rheostats): রিওস্ট্যাট হচ্ছে দুই অথবা তিন টার্মিনাল বিষিষ্ট ডিভাইস যা কারেন্ট ম্যনুয়ালে বা হাতের দ্বারা কারেন্ট লিমিটিং এর উদ্দেশ্যে ব্যবহার হয়। এটি কোন ইন্টের‍্যপশন ছাড়াই সার্কিটে রেজিস্ট্যান্স পরিবর্তন করতে পারে। এটি ট্যাপারড রেজিস্টর অথবা ভেরিয়েবল ওয়্যার ওউন্ড রেজিস্টর হিসেবেও পরিচিত। রিওস্ট্যট এর গঠন প্রায় পটেনশিওমিটারের মত একই। এর তিনটি টার্মিনাল থাকলেও মাত্র দুটি কানেকশন ব্যবহার করা হয়। প্রথম কানেকশনটি রেজিস্টিভ ইলিমেন্ট এর একপ্রান্তে এবং অন্য কানেকশনটি স্লাইডিং কন্টাক্ট এর সাথে যুক্ত থাকে।

ডিজিটাল রেজিস্টর(Digital): ডিজিটাল রেজিস্টর হচ্ছে এমন এক প্রকার রেজিস্টর যার কন্ট্রোলিং মেকনিক্যাল মুভমেন্ট দ্বারা হয় না বরং ইলেক্ট্রিনিক সিগনাল এর মাধ্যেমে সম্পন্ন হয়।

নন-লিনিয়ার রেজিস্টরস(Non linear resistors):যে সকল রেজিস্টরের ভ্যালু প্রয়োগকৃত ভোল্টেজ এবং টেম্পেরেচারের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন হয় এবং যে রজিস্টর Ohm’s Law এর উপর নির্ভরশীল নয় সেতাই নন-লিনিয়ার রজিস্টর। বিভিন্ন প্রকার নন-লিনিয়ার রেজিস্টরের প্রকারভেদ নিম্নরুপঃ

১। থার্মিস্টারস ২। ভ্যারিস্টারস ৩। ফটো রেজিস্টরস  

থার্মিস্টর(Thermistor): থার্মিস্টার হচ্ছে একটি রেজিস্ট্যান্স থার্মোমিটার এবং এর রেজিস্ট্যান্স তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। থার্মিস্টর হচ্ছে সার্কিটের একটি প্যাসিভ বা নিস্ক্রিয় উপাদান এবং এটি সস্তা এবং সঠিক তাপমাত্রা পরিমাপের একটি শক্তিশালী উপায়। থার্মিস্টর খুব বেশী তাপমাত্রায় এবং ঠান্ডায় ভাল কাজ করে না। ওহম মিটারের সাহায্যে থার্মিস্টরের রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করা যায়।

ভ্যারিস্টর(Varisters) VDR:  ভ্যারিস্টর হচ্ছে ভোল্টেজ ডিপেন্ডেন্ট রেজিস্টর (VDR)। ভ্যারিস্টরের রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে ভেরিয়েবল এবং এটি ভোল্টেজের উপর নির্ভরশীল। ভেরিয়েবল এবং রেজিস্টর শব্দ থেকে ভেরিস্টর শব্দের উৎপত্তি। ভ্যারিস্টরের ভোল্টেজ বাড়লে রেজিস্ট্যান্স কমে যায়। যদি হঠাৎ অতিরিক্ত ভোল্টেজ বেড়ে যায় তাহলে এদের রেজিস্ট্যান্স আকস্মিকভাবে হ্রাস পায়। 

ফটো রেজিস্টর(Photo resistors): ফটো রেজিস্টরকে সংক্ষেপে LDR বলা হয়। যে সকল রেজিস্টরের রেজিস্ট্যান্স ভ্যালু পরিবর্তন হয় আলোর তীব্রতার সাথে তবে তাকে ফটোরজিস্টর বা LDR বলা হয়। যে সকল ম্যাটেরিয়াল দ্বারা ফটো রেজিস্টর তৈরি করা হয় সেগুলোকে ফটো কন্ডাক্টর বলা হয়। যেমনঃ ক্যাডমিয়াম সালফাইড, লিড সালফাইড।

Read more: ১। রেকটিফায়ার ২। ডায়োড ৩। রিলে ৪। ফিউজ 

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Multiplex ads